ইসলাম চন্দ্র ক্যালেন্ডার( Lunar calendar) অনুসরণ করে চাঁদের পর্যায় অনুসারে। হিজরী নবম মাসই রমজান নামে পরিচিত ,রমজান মাস শেষ হওয়া পরের দিন ঈদ উল ফিতর পালন করা হয় যা আরবি ১০ম তম মাস শাওয়াল মাসের ১ম দিনটিতে পালন করা হয় ।
চাঁদ দেখা নিয়ে ঈদ পালন এই বেপারটি নিয়ে বেশ বিতর্ক রয়েছে৷ অনেক দেশের মুসলমানরা নতুন চাঁদকে সরকারি ভাবে দেখার খবরের উপর নির্ভর করে। কেউ কেউ চন্দ্র ক্যালেন্ডার অনুসরণ করেন, আবার কেউ কেউ অমাবস্যার আগমনের ঘোষণার জন্যে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পর্যবেক্ষণ ব্যবহার করেন৷ এছাড়াও রয়েছে যারা আকাশে ক্রিসেন্ট চাঁদ দেখার পরে কেবল নতুন মাসটি চিহ্নিত করেন। UK সহো অন্যান্য বেশ কিছু রাষ্ট্র সরকারি ভাবে ঘোষণার জন্যে অপেক্ষায় থাকে। তবে প্রায়শই UK, বা অন্যান্য রাষ্ট্রগুলোতে সহজে চাঁদ দেখা যায় না। এই পরিস্থিতিতে মসজিদ সহো ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো কখন ঈদ উদযাপন হবে তা স্থির করেন।
ঈদ উল ফিতর শাওয়াল মাসের ১ম দিন উদযাপিত হয় তবে এটি বিভিন্ন মুসলিম দল দ্বারা বিভিন্ন উপায়ে নির্ধারিত হয়। যেমনঃ
- নিজ চোখে অমাবস্যার ( new moon) প্রকৃতি দেখার দ্বারা
- মক্কার অনুসরণ করে এবং মক্কার সাথে একই দিনে ঈদ উদযাপন এর মাধ্যমে
- অমাবস্যার শুরু দিন গণনা দ্বারা, যদিও এটি খালি চোখে দৃশ্যমান নাও হতে পারে, এমনকি নির্ভুল অবস্থায় ও
- নিখুঁত ভাবে অমাবস্যার প্রকৃতি দেখার গণনা দ্বারা
বাংলাদেশের জিওগ্রাফিক অবস্থান অনুযায়ী চাঁদ উঠা ও অস্ত যাওয়ার মাধ্যমে সময় গণনা করা যায় ।কমপক্ষে ৫/৬ দিন আগেই ঈদ উল ফিতর এর তারিখটি ঘোষণা করতে পারি যাতে লোকেরা ঝামেলা, দ্বিধা এবং অনিশ্চয়তা ছাড়াই ঈদ উদযাপন করতে পারে। চাদ দেখা ও সে অনুযায়ী ঈদ পালন করা আর চাঁদ এর অবস্থান বুঝা একটা ফ্যাক্টর । সূর্য উদয়, সূর্য অস্ত, চাঁদ উদয়, চাঁদ অস্ত এসব হিসাব নিকাশ এর মাধ্যমে খুব সহজে বলা যায়৷ সূর্য আর চাঁদ এর উদয় অস্ত সব ডিপেন্ড করে উভয়ের অবস্থানের latitude এবং longitude এর উপরে। ঢাকার জিওগ্রাফিক লোকেশন 23°43'N,90°26'E. ঢাকার আকাশ থেকে নতুন চাদ এর ৩.১% (at 8pm) দৃশ্যমান দেখা যাচ্ছে। দেশের অধিকাংশ এলাকা থেকেই দেখা সম্ভব (যদি আকাশ পরিস্কার থাকে) সৌদি আরবের রিয়াদ শহরের জিওগ্রাফিক অবস্থান 24°39'N46°46'E. জিওগ্রাফিক অবস্থান ভিন্ন হওয়ার ফলে দেখা যায় দুইটি স্থানের Longitudinal Difference এরফলে ঢাকা ও রিয়াদ এর মধ্যে সময় ব্যবধান 3 ঘন্টা৷ কিন্তু এখন বুঝার বিষয় এই 3 ঘন্টা সময় ব্যবধানের পরেও কেনো সৌদি আরব আমাদের চেয়ে 1 দিন আগে চাদ দেখে ঈদ পালন করে?
যখন আমরা কোনো ফিক্সড তারার সাপেক্ষে চাঁদের গতি পর্যবেক্ষণ করি তখন দেখা যায় ঘূর্ণনকাল 27.3 days. নিজের অক্ষের চারপাশে ৩৬০° ঘুরতে যে সময় প্রয়োজন হয় সেটাই হলো sidereal Month. চাঁদের গতির হার 13.20°/per day পূর্ব দিকে ফিক্সড তারার সাপেক্ষে আবার চাঁদের গতির হার 12.20°/per day পূর্ব দিকে সূর্যের সাপেক্ষে। এইরকম কারণ সূর্যের নিজের ও আপাত গতি রয়েছে ecliptic এর পূর্ব দিকে 1°/per day ফিক্সড তারার সাপেক্ষে। আসলে সূর্যের আপাত গতির ফলাফল সরূপ পৃথিবীর বার্ষিক গতি সূর্যের চারপাশে।চাঁদ যখন খ- গোলকের (Celestial sphere) চারপাশে ঘুরে আবার নিজের অবস্থানে আসে সূর্যের সাপেক্ষে ওই সময় কে বলা হয় synodic month. 29.5 দিন সময় প্রয়োজন চাঁদ তার নিজের সম্পূর্ণ কলা পর্যায়ক্রমে ঘুরে আবার আগের অবস্থানে আসতে। চাঁদের বার্ষিক গতি পৃথিবীর চারদিকে এর ফলে সূর্য ও চাদের মধ্যবর্তী কোণ কন্টিনিউয়াসলি চেঞ্জ হয় যা কিনা পৃথিবীর সাপেক্ষে বুঝা যায়। আর এই কোণ কে বলা হয় ইলোংগেশন (elongation)
Elongation is the angular distance of an object measured along the ecliptic, eastward or westward from the Sun.
ইলোংগেশন ও নতুন চাদ উঠাঃ সৌর দিবসের দুপুরে (Solar Noon) অমাবস্যা'র দিন (new moon) পৃথিবী চাঁদ ও সূর্য একই সরলরেখায় অবস্থান করে তাউ চাঁদ ও সূর্যের মধ্যবর্তী কোণটি শূন্য। পরের দিন দুপুরে যদি আমরা আমার লক্ষ্য করি তাহলে দেখা যাবে যে, সূর্য ও চাঁদের মধ্যবর্তী কোণটি বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পূর্ব গোলার্ধে চাঁদের ক্ষুদ্র অংশ দৃশ্যমান।